
এক গ্রামে এক বৃদ্ধা স্ত্রী থাকত,কেউ ছিল না তার গ্রামে গোবরের ঘুটে বানিয়ে বিক্রি করত এবং তার দিন কাটত। ঐ বৃদ্ধা স্ত্রীর একটা বিশেষতা ছিল যে,সে কৃষ্ণ ভক্ত ছিল উঠতে বসতে অবিরত কৃষ্ণনাম করত,ঘুটে বানানোর সময়ও সে কৃষ্ণনাম করত। গ্রামে কিছু দুষ্ট লোক বৃদ্ধার ভক্তিকে উপহাস করত। একদিন ঐ দুষ্ট
লোকগুলো রাতে বৃদ্ধার সব ঘুটে চুরি করে নিয়ে যায়। যাবার সময় বলতে লাগল দেখি এবার কৃষ্ণ কি করে সাহায্য করে। সকালে যখন উঠে বৃদ্ধা দেখল তার ঘুটে গুলো কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে।
বৃদ্ধা মনে মনে হাসতে লাগল আর প্রাণ কৃষ্ণকে বললেন, প্রথমে তো গোপীদের মাখন চুরি করতে,দধি ভান্ড
ভাঙ্গতে গোপীদের সাথে কত আনন্দ দিতে। এখন এই ঘুটে চুরি করে বৃদ্ধার সাথে মজা করছ। যা তোমার ইচ্ছা তাই হোক,তা বলে পরের দিনের জন্য ঘুটে বানতে লাগল। দুপুর হয়ে গেল,বৃদ্ধার খুব ক্ষুধা পেয়েছিল,ঘরে খাবার কিছু ছিল না। দুই টুকরো গুড় ছিল,একটু গুড়
খেয়ে ক্ষুধা নিবারন করল। পরমেশ্বর ভগবান তো ভক্ত বৎসল তাই ভক্ত কষ্ট সহ্য করতে পারেন না,বৃদ্ধার কষ্ট ভগবান সহ্য করতে পারছিল না। একে সাহায্য
করার আগে বৃদ্ধার পরীক্ষা নিতে হবে ।
সাধুর রূপ নিয়ে বৃদ্ধার ঘরে পৌঁছালেন খাবার ভিক্ষা করতে লাগল। বৃদ্ধা সাধুকে দেখে খুব খুশি হল,কিন্তু
খাবার কিছু ছিল না। গুড়ের সেই টুকরোটার সাথে শীতল জল সাধুকে খেতে দিল সাধুরূপী ভগবান বৃদ্ধার ত্যাগ দেখে প্রসন্ন হয়ে গেল। বৃদ্ধা সকল কথা সাধুকে বলল,সাধু তাকে সাহায্য করবে বলে কথা দিলেন। গ্রামের প্রধান জমিদারের কাছে গিয়ে বললেন,আপনার গ্রামের বাহিরে যে বৃদ্ধা থাকে কে যেন তাঁর ঘুটে চুরি করে নিয়ে গেছে। আপনি গ্রামে সবাইকে তাদের ঘুটে গুলো আনতে বললেন,আমি আমার সিদ্ধি বলের শক্তি দিয়ে বৃদ্ধার ঘুটেগুলো আলাদা করতে পারব ।
জমিদার ভাল লোক ছিল,বৃদ্ধার কষ্টে দুঃখ পেলেন কৃষ্ণ রূপী সাধুর কথা শুনে গ্রামে ঘোষনা করলেন,সকলের ঘুটে যেন গ্রামের মাঠে রাখা হয়। যে দুষ্ট লোকরা চুরি করেছিল তারাও নিজেদের ঘুটে সাথে মিশিয়ে বৃদ্ধার
ঘুটে গুলো আনল। এত ঘুটের মধ্যে সাধু কি করে চিনবে । দুর্জন ব্যক্তিদের পরমেশ্বর ভগবানের লীলার রূপ বিশ্বাস হয় না,সাধুরূপী কৃষ্ণ মূহুর্তের মধ্যে ঘুটেতে কান
লাগিয়ে বৃদ্ধার ঘুটেগুলো আলাদা করে দিলেন। নিজের
ঘুটে পেয়ে সেগুলো নিয়ে বৃদ্ধা খুব খুশি,সাধুরূপী কৃষ্ণকে প্রণাম করলেন। দুষ্ট লোকরা কিছুতে বুঝতে পারল না সাধু কান দিয়ে কি করে ঘুটে খুঁজে নিলেন ।
গ্রাম থেকে একুট দূরে গেলে তারা সাধুকে জিজ্ঞাসা করল,কি করে তিনি এই ঘুটে আলাদা করলে। কৃষ্ণরূপী সাধু বললেন,বৃদ্ধা নিরন্তর নাম করে,নামের এত শক্তি যে ঘুটে মধ্যে হতে নামের ধ্বনি হচ্ছে,কান দেয়াতে ঘুটেতে নাম শুনা যাচ্ছে কান দিয়ে শুনে এই ঘুটে গুলোকে আলাদা করে দিলেন। এই থেকে নামের
মহিমা জানা যায়,জীবনের প্রতিটি কাজ করার সময় নাম জপ করা উচিত,পরমেশ্বর ভগবান শক্তি আছে নামের মধ্যে দিয়ে সর্বদা পরমেশ্বর ভগবানের দিব্য নাম জপ করুন সুখি হোন।
জীবনের প্রতিটি কাজ করার সময় নাম জপ করা উচিত
Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ
on
18:28
Rating:
No comments: