..............

ঠাকুর ছিলেন আড়ম্বরহীন সাধারণ

ঠাকুর ছিলেন আড়ম্বরহীন সাধারণ
Image may contain: 1 person, standing

শ্রী শ্রী সমাধিক্ষেত্র পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে আমরা মাঝে মাঝে আপনাদের কাছে শ্রী শ্রী ঠাকুরের সম্পর্কিত বিষয়াদি নিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করার চেষ্টা করে থাকি। আজ তারি ধারাবাহিকতায় যে সমস্ত পরম ভাগ্যবান ভক্তগণ শ্রী শ্রী ঠাকুর রামচন্দ্র দেবের সাহচর্যে থেকে তাঁর লীলা আস্বাদন করে ধন্য হয়েছিলেন এবং তাঁর সঙ্গলাভ করে নিজ অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করে রেখে যাওয়াতে আমাদেরকেও ধন্য করেছেন তার মধ্যে বিশিষ্টজনদের কয়েকজনের কিছু উক্তি সকল ভক্তদের উদ্দেশ্যে নিবেদিত হলো।
প্রখ্যাত চিকিৎসক ও শ্রী শ্রী ঠাকুরের একনিষ্ঠ সেবক ডাঃ যতীন্দ্র মোহন দাশগুপ্ত (যতীন) এর মাধ্যমে শ্রী শ্রী ঠাকুরের সাথে পরিচয় পর্বশেষে কথা প্রসঙ্গে বিখ্যাত লেখক শরৎচন্দ্র ও রবি ঠাকুরের শেষ বয়সের উক্তি:
"যতীন, লোকে বলে সমুদ্রের পারাপার নেই, আমি বলি সমুদ্রের ও একটি পার বা শেষ আছে। কিন্তু তোমার ঠাকুরের কোন পারাপার নেই। যা-ও দিলে শেষ সময় দিলে, এখন আর সময় নেই.............
(কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
"ঠাকুর দুর্জ্ঞেয় কিন্তু আকর্ষণ তাঁর দুর্বার। বেশিক্ষণ তাঁর কথা মাথায় রাখতে পারি না। তাই বারবার উঠে আসি। তাঁর কাছে যখনই থেকেছি। মনে হয়েছে সব পেয়েছির দেশে বাস করছি। দূরে গেলে সুর হারিয়ে ফেলি।"
(অমর কথা শিল্পী
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)
"রাম ঠাকুর দেখিতে ক্ষীণাঙ্গ, সুন্দর, শান্তমূর্তি.. বয়স ২৬/২৭ মাত্র... নিজে কিছুই আহার করেন না। কদাচিৎ দুগ্ধ বা ফলাহার করেন। অথচ তাঁহার সুস্থ ও সবল শরীর। পরসেবায় তাঁহার পরমানন্দ।.... তাঁহার ৮হইতে ১২বৎসর পর্যন্ত সামান্য বাংলা শিক্ষা মাত্র হইয়াছিলো। কিন্তু ধর্মের নিগূঢ় তত্ত্ব, এমনকি, প্রণবের অর্থ পর্যন্ত সে জলের মত বুঝাইয়া দিত। আমি তাঁহাকে বড় শ্রদ্ধা করিতাম। মধ্যে মধ্যে আমি তাঁহাকে পীড়াপীড়ি করিয়া আমার গৃহে আনাইতাম এবং পতি পত্নী মুগ্ধ চিত্তে তাঁহার অদ্ভুত ব্যাখ্যা। সকল শুনিতাম। বলা বাহুল্য, সে পেশাদারী হিন্দু প্রচারকের ব্যাখ্যা নহে।"
(কবি নবীন চন্দ্র সেন)
ঠাকুর ছিলেন আড়ম্বরহীন সাধারণ মানুষের মত, বাহ্যিক আবরণের কোন বালাই ছিলো না। তিনি সর্ব্বশাস্ত্র বিশারদ ছিলেন। মহান আত্মার ভাবাবেশে তিনি কথা বলিতেন। তাঁহার সম্মুখে উপস্থিত হইলে সকলেরই মস্তক আপনিই অবনত হইত, মহান সঙ্গীতের ন্যায় তাঁহার কন্ঠস্বর। পাপী, অজ্ঞ,মুর্খ সমাজের পরিত্যাক্ত যত আবর্জনা সবাইকে তিনি কোলে টানিয়া লইতেন। যাহা তিনি স্পর্শ করিয়াছেন,তাহাই পবিত্র হইয়াছে আপন-পর তাঁহার নিকট আবিদিত ছিল। সবাই তাঁহার নিকট সমান। "
(অধ্যাপক, ডঃ প্রভাতচন্দ্র চক্রবর্তী)
তাঁহার সহিত যে কি সম্বন্ধ তাহা জানি না, জানিবার প্রয়োজন ও হয় নাই। তবে সত্য কথা এই যে, তাঁহাকে বড় ভালো লাগে- প্রাণ ভরিয়া ভালোবাসিতে ইচ্ছে হয়। তাঁহার সুন্দর মূর্তি, বাল প্রকৃতি,প্রাণ স্পর্শিনী মধুর কথা সকলেরই প্রানে আনন্দ ধারা বর্ষণ করে। তাঁহার মধ্যে কি জানি কি আছে যাহা সকলকেই আকর্ষণ করে, অল্পেই আপন করিয়া লয়। একবার দেখিলে কেন জানি মনপ্রাণ তাঁহার চরণে লুটাইয়া পড়িতে চায়। কলুষপঙ্কিল জীবনে যে কয়টি মুহুর্ত তাঁহার সঙ্গে অতিবাহিত করিয়াছি,তাঁহার পবিত্র স্মৃতি হৃদয়ে অঙ্কিত রহিয়াছে। প্রানের আবেগে শেষে শুধু বলিতে ইচ্ছা হয়-' তুঁয়া চরণে মন লাগ হুঁ রে'। জন্মে জন্মে যেন তাঁহার শ্রী চরণের দাসানুদাস হইতে পারি - ইহাই প্রার্থনা। "........
(অধ্যাপক,ডঃ প্রভাতচন্দ্র চক্রবর্তী)
ঠাকুরের সহিত আমাদের ইহজীবনের রক্ত-মাংসের সম্বন্ধ বর্তমান আছে বলিয়া কেহ কেহ আমাদিগকে ঠাকুর পরিবার বলিয়া থাকেন। নচেৎ ঠাকুর পরিবার বলিতে গেলে এই বিশ্বাসংসারই তাঁহার পরিবার। তাঁহার বিশাল বক্ষ সকলের জন্যই উন্মুক্ত,সকলেই তাঁহার আপনজন। যিনি তাঁহার সংস্পর্শে আসিয়াছেন, তিনি জানেন- তিনি ঠাকুরের কত আপনজন। কত গভীর স্নেহ সেই বক্ষে তাহার জন্য সঞ্চিত রহিয়াছে।
(শ্রী মহেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্তী)
"ঠাকুর যত দর্শন করি, ততই আরও বেশি দর্শন করিতে ইচ্ছা হয়। সর্বসুন্দর ঠাকুরের সৌন্দর্য্য প্রকাশের ভাষা আমার নাই। এইমাত্র বলিতে পারি,আমার ঠাকুর সুন্দর, অতি সুন্দর, পরম সুন্দর, অবর্ণনীয় সুন্দর।তাই ঠাকুর দর্শন করিয়া তৃপ্তি মিটেনা।" চিত্তে একটি মাত্র অনুভূতি জাগে, "চির সুন্দরে মজুক আমার চোখ।"
(ফনীন্দ্র কুমার মালাকার)
"ঠাকুর ছিলেন আড়ম্বরহীন সাধারণ
মানুষের মত। বাহ্যিক আবরণের কোন বালাই ছিল না। প্রথম দর্শনলাভের সৌভাগ্যের দিন হইতে যত দিন সুস্থ দেহে ছিলেন একখানি ধূতি ও একটি চাদর তাঁহার পরিধেয় দেখিয়াছি। শীতে- গ্রীষ্মে সর্বদাই একই পোশাকে থাকিতেন। জীবনের শেষ ভাগে আশ্রিতরা তাঁহাকে গরম জামা, কাপড় প্রভৃতিতে ভুষিত করিতেন। ঐগুলি তিনি ইচ্ছামত দান করিতেন। পুঁথিগত বিদ্যা তাঁহার অবিদিত ছিল বলা চলে।তবু তিনি সর্ব্বশাস্ত্রবিশারদ ছিলেন। মহান আত্মার ভাবাবেশে তিনি কথা বলিতেন। তাঁহার সন্মুখে উপস্থিত হইলে সকলেরই মস্তক আপনিই অবনত হইত। সুগভীর জ্ঞান ও পবিত্রতা তাঁহার নিকট নিশ্বাস প্রশ্বাস এর ন্যায় স্বাভাবিক। সবাই তাঁহার নিকট সমান। সর্ব্বাধিক প্রিয় তাঁহার কেহই ছিল না, তাঁহার নিকট যিনি থাকিতেন, মনে করিতেন তিনি ঠাকুরের অতি প্রিয়জন।"
(শ্রী রোহিণী কুমার মজুমদার)
পরিশেষে সকল রামভক্ত গুরু ভাই-বোনদের জানাই অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে প্রণাম -শুভেচ্ছা। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শ্রী শ্রী ঠাকুরের নিকট এই প্রার্থনা।
ধন্যবাদ
জয় রাম, জয় কৈবল্যনাথ,
জয় কৈবল্যশক্তি, জয় গুরু সত্যনারায়ন
ঠাকুর ছিলেন আড়ম্বরহীন সাধারণ ঠাকুর ছিলেন আড়ম্বরহীন সাধারণ Reviewed by SRISRI RAMTHAKUR KOTHA O BANI YOUTUBE CHANNEL on 18:47 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.