..............

একনিষ্ঠা ও শরণাগতির উপর রামঠাকুর সর্ব্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করিতেন,





 একনিষ্ঠা ও শরণাগতির উপর রামঠাকুর সর্ব্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করিতেন


আজমীরের শেঠ শিবরাম ও তাঁহার স্ত্রী দুর্গামণির জীবনে ঠাকুরের উদয় হয় বড় অলৈকিকভাবে। হঠাৎ শেঠজীর একদিন সখ হয় পত্নীসহ একটি ভাল ফটো তোলাইবেন। শেষ বয়সের দাম্পত্য জীবনের মধুর স্মৃতিটিকে তিনি ধরিয়া রাখিতে চান।
বড় শহর হইতে এক সুদক্ষ ফটোগ্রাফার আনা হইল। তোড়জোড় করিয়া ফটোও নেওয়া হইল। কিন্তু রাসায়নিক প্রয়োগে ছবি ফুটাইয়া তুলিতে গিয়া দেখা গেল এক আদ্ভুদ দৃশ্য! স্বামীস্ত্রী উভয়েই উপবিষ্ট,কিন্তু তাঁহাদের মধ্যে দন্ডায়মান রহিয়াছেন এক অপরিচিত পুরুষ! কে ইনি? শেঠজী ও তাঁহার স্ত্রী কোনদিন ইহাকে দেখিয়াছে বলিয়া তো মনে পড়ে না

শুধু তাহাই নয়,কি যেন এক দুর্নিবার আকর্ষণ রহয়াছে এই রহস্যময় ছবির। উপলব্ধি করেন,এই ছবি যাঁহার তিনি এক উচ্চকোটি মহাপুরুষ। ক্রমে শেটজী ও শেঠপত্নীর অন্তরে জাগিয়া উঠে এক তীব্র বাসনা,- এই মহাপুরুষকে তাঁহারা খুঁজিয়া বাহির করিবেন।
আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধবরা বার বার তাঁহাদের বাধা দেন। কিন্তু ভক্ত দম্পতির মনের আকুলতা দূর হয় কই? অবশেষে তীর্থ দর্শণের অজুহাতে উভয়ে পরিব্রাজনে বাহির হইয়া পড়েন।
দীর্ঘ স্মরন,মনন ও অনুধ্যানের ফলে এই মহাপুরুষই হইয়া উঠেন শেঠ দম্পতির ইষ্ট। নিত্যকার তীর্থদর্শণ,দানকর্ম প্রভৃতির শেষে উভয়ে মহাপুরুষের ফটোটির দিকে নির্নিমেষে চাহিয়া থাকেন। প্রেমাশ্রুধারায় বসন সিক্ত হয়। এভাবে প্রায় পনের বৎসর কাল তাঁহারা ভারতের নানা তীর্থে ও সাধুমন্ডলীতে ঘুরিয়া বেড়াইলেন। অভীষ্ট সিদ্ধ হইল না।
বৃদ্ধাবস্থায় ছুটাছুটি আর কতদিন করা যায়? অবশেষে শেঠজী স্ত্রীকে নিয়া কাশীতে আসিয়া বসবাস শুরু করেন। আরো কয়েক বৎসর অতিবাহিত হইয়া গেল। শেঠ দম্পতি এখন বড়ই অশক্ত হইয়া পড়িয়াছেন। পদব্রজে গঙ্গাস্নানে যাইবার শক্তি সামর্থ্যও তেমন নাই। পাল্কী করিয়া রোজ তাঁহারা প্রাতঃস্নানে যান। একদিন হঠাৎ গঙ্গার পথে মিলে বহু আখাংকিত পুরুষের দর্শণ! ফটোর মধ্যে রহস্যময় আবির্ভাবের মধ্য দিয়া যিনি তাঁহাদের হৃদয় জুড়িয়া বসিয়াছেন, এই সেই কৃপালু মহাপুরুষই ব্রহ্মবিদ্ শ্রীশ্রী রামঠাকুর!



উভয়ে ত্রস্তেব্যস্তে পাল্কী থেকে নামিয়া পড়িলেন। পতিত হইলেন তাঁহার চরণে। ক্রন্দন আর্ত্তি আর থামিতে চাহে না,চারিদিকে লোক জড়ো হইল। অভীষ্ট সিদ্ধির কিছু পরেই দেখা গেল,স্বামীস্ত্রী উভয়েরই বিগতপ্রাণ দেহ ভুমিতে লুটাইতেছে। ঠাকুরের বহুইস্পিত দর্শণ ও চরণস্পর্শ লাভের ফলে প্রাক্তনের ভোগ মুহুর্ত্তে হইয়াছে নিঃশেষিত,জীবনে তাঁহাদের আসিয়াছে মহামুক্তি।
নির্ব্বিকার চিত্তে মনিকর্ণিকার শ্মশানে বসিয়া ঠাকুর এই ভক্ত দম্পতির শেষকৃত্য সম্পন্ন করিলেন। তারপর নীরবে কোথায় হইলেন অন্তর্হিত।
শেঠ দম্পতির এই একৈকনিষ্টা ও আত্মসমর্পণ যে কোন সাধন কামী মানুষেরই আকাঙখিত। এই ধরণের একনিষ্ঠা ও শরণাগতির উপর রামঠাকুর সর্ব্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করিতেন,ইহাই ছিল তাঁহার বহুবর্ণত “পতিব্রতা-ধর্মের মুল কথা।
“ভারতের সাধক”
শংকরনাথ রায়।
একনিষ্ঠা ও শরণাগতির উপর রামঠাকুর সর্ব্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করিতেন, একনিষ্ঠা ও শরণাগতির উপর রামঠাকুর সর্ব্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করিতেন, Reviewed by SRISRI RAMTHAKUR KOTHA O BANI YOUTUBE CHANNEL on 19:56 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.