..............

শ্রীঠাকুর কখনও অতিথির অযত্ন সহ্য করিতে পারিতেন না

শ্রীঠাকুর কখনও অতিথির অযত্ন সহ্য করিতে পারিতেন না । তাঁহার নিকটেই শিক্ষা করিয়াছি সত্যিকারের অতিথি সেবা কাহাকে বলে ।
শ্রীঠাকুর আমাদের একবেলা মাছ আর একবেলা মাংস আহার করিতে আদেশ করিলেন ।কোন আগন্তুক আসিলে রান্নার কি ব্যবস্থা নিজে আমার স্ত্রীর নিকট খোঁজ করিতেন ।একদিন কাশী হইতে তার আসিল শ্রদ্ধেয় সত্যেনদা ও পূজনীয় অশোকচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় সন্ধ্যাবেলা মজঃফরপুর পৌঁছিবেন ।
শ্রীঠাকুর তাঁহাদের আহারের জন্য আমার স্ত্রীর সহিত কথা বলিয়া মাংস , রাবড়ি ও বলুসাই আনিতে আদেশ করিলেন । সন্ধ্যার পূর্বেই সমস্ত আয়োজন শেষ হইল । অতিথিদের দেখা নাই । ষ্টেশনে খোঁজ লইয়া জানিলাম , কাশীর গাড়ি সেদিন আসিবে না । ট্রেনে এত ভিড় যে , আসিবার উপায় নাই ।হতাশ মনে বাসায় ফিরিয়া শ্রীশ্রীঠাকুরকে সকাশে সমস্ত নিবেদন করিলাম । আমার স্ত্রী বলিলেন , এতখানি মাংস খাবে কে ? উত্তরে শ্রীঠাকুর বলিলেন , দেখি আপনি কেমন মাংস রাধিয়াছেন ?আমার স্ত্রী রান্না করা মাংসের পাত্রটি আনিয়া দিলেন ।শ্রীঠাকুর নিজে ঐ পাত্র হইতে মাংস খাইতে আরম্ভ করিলেন ।খাইতে খাইতে সমস্ত মাংসই শেষ ! আমরা হতবাক হইয়া দাঁড়াইয়া আছি ।কাহারও মুখ হইতে একটুও শব্দ বাহির হইল না ।শ্রীশ্রীঠাকুর বলিলেন , রাঁধিবার সময় খুব সাবধানে চতুর্দিক লক্ষ্য রাখিয়া রাঁধিতে হয় ।
আমি বলিয়া উঠিলাম , তাহা হইলে এই মাংস খাইলেন কেন ?ফেলিয়া দিলেই চলিত ।শ্রীঠাকুর বলিলেন , এই মাংস খাইলে এমন কি পিঁপড়া পর্য্যন্ত মরিয়া যাইত । প্রায় এক ঘন্টা পরে শ্রীঠাকুরের দাস্ত আরম্ভ হইল ।আট-দশ মিনিট পর পর পায়খানায় যাইতেছেন । পেটের যন্ত্রণায় ছটফট করিতেছেন । শ্রীঠাকুরের কষ্ট দেখিয়া , ডাক্তার অনিবার জন্য ব্যস্ত হইলাম । শ্রীঠাকুর বলিলেন ডাক্তার আনিবার প্রয়োজন নাই । আপনি আপাং গাছের শিকড় গোলমরিচসহ বাটিয়া আনেন । আপাং গাছের শিকড় একতোলা গোলমরিচসহ বাটিয়া দিলাম ।রাত্রি প্রায় তিনটার সময় শ্রীঠাকুর এই ঔষধ সেবন করিলেন । প্রায় আধঘন্টা পরে যেন ঘুমাইয়া পড়িলেন । পরের দিন শ্রীঠাকুরকে সুস্থ মনে হইল । এই ঘটনার মাধ্যমে শ্রীঠাকুর আমাদের শিক্ষা দিলেন যে , অতিথি নারায়ণ । তাঁহার সেবায় যেন কোন ত্রুটি না হয় । অসাবধানতার জন্য মাংসের ভিতর বিষাক্ত কিছু পড়িয়াছিল ।ভোগ রান্না করিবার সময় সাবধানে চতুর্দিকে লক্ষ্য রাখিতে হইবে । কোন জিনিস না ঢাকিয়া রাখিতে নাই ।তাঁহার এই কষ্টবরণের দ্বারা আমদের সম্মুখে উদাহরণ রাখিয়া গেলেন । ভবিষ্যতে যেন এই ঘটনার পুণরাবৃত্তি না হয়। :---- 
" শ্রীগুরু শ্রীশ্রীরাম ঠাকুর " পৃষ্টা সংখ্যা ৪৯ হইতে
শ্রীঠাকুর কখনও অতিথির অযত্ন সহ্য করিতে পারিতেন না শ্রীঠাকুর কখনও অতিথির অযত্ন সহ্য করিতে পারিতেন না Reviewed by SRISRI RAMTHAKUR KOTHA O BANI YOUTUBE CHANNEL on 18:00 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.