..............

ধৈর্য ই একমাত্র ধর্ম

 ধৈর্য ই একমাত্র ধর্ম




আমার ভাই ছেলের অন্নপ্রাশন আমি বিক্রমপুর সেরাজদিঘী জন্য ট্রেন রওনা হলাম যাওয়ার আগে ফেনী তে নামিয়ে ঠাকুর দর্শন করিতে গেলাম |
প্রণাম করতে ই ঠাকুর জিগেস করলেন কোথায় যান' "আমি উত্তরে করিলাম , সুরেন র ছেলের অন্নপ্রাশন ,তাই সেরাজদীঘি যাচ্ছি | " ঠাকুর বলিলেন ,"আমি আপনার সঙ্গে যাবো| " ঠাকুর কথা শুনে আমি তো অপ্রুস্তত , রাহা খরচ ছাড়া আর সামান্য টাকা ই আমার হাতে ছিল | ভাবিলাম কাহার নিকটে হইতে টাকা সংগ্রহ করিবো | সেদিন শনিবার ছিল | ঠাকুর কে জিজ্ঞাসা করিলাম , সুরেন নিকট টেলিগ্রাম করে দেব কি? তিনি বলিলেন , দেন |'ঠাকুরের সঙ্গে এইসব কথা হচ্ছিলো বাড়ির মালিক জানিতেন না | টেলিগ্রাম করিয়া ঠাকুরের নিকট বসিলে ঠাকুর বলিলেন , আজ রওনা না হইয়া আগামীকাল রওনা হইলে চলে না ? আমি সম্মতি জানাইলাম | এমন সময় বাড়ির মালিক ও সঙ্গে চার পাঁচ জন লোক মিলিয়ে ক্রুদ্ধ ভাবে আমাকে বলিলেন " শুনলাম আপনি ঠাকুর কে কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন ? " আমি বলাম ,"সে কি ! আমি ঠাকুর কে কোথায় নিয়ে যাবো ? বরং ঠাকুর ই আমার সাথে যেতে চাইছেন |" পরে অন্নপ্রাশন আমার যা ও য়ার কথা ও দো পোস্ত বলিলাম | বাড়ির মালিক আমার কথা বিশ্বাস নাকরিয়া আমার গেঞ্জির কলার ধরিয়া আমাকে ঘুষি মারিতে মারিতে ঠাকুর সম্মুখ হইতে আমায় বারান্দায় লইয়া গেলেন এবং উতেজিত স্বরে পুন: পুন: বলিতে লাগিলেন | " ঠাকুর যাতে আপনার সঙ্গে না যান , সে ব্যবস্থা করুন | আপনি না বলে তিনি কারু কথা শুনবেনা | " আমি বিপ্পন হইয়া বলিলাম, "আমি কি ব্যাবস্তা করিব ,আপনি ঠাকুর কে নিরস্ত করুন | বাড়ির মালিক শাসাইয়া বললেন যে ভাবে হোক ঠাকুরের যাওয়া বন্ধ করতে হবে | লজ্জা অপমানে আমি যেন মরমে মরিয়া যাইতাছি তখনই মনে ওই ঘরে ছেড়ে তখনই চলিয়া যাই | ঠাকুর নিকট যেতে ঠাকুর বলিলেন ," আপনার আবার কি হইলো," এমন ভাব তিনি যেন কিছু জানেনা | আমার ঠাকুর প্রতি অভিমান দুঃখ বাড়িয়ে গেল | বহু কষ্ট নিজের চোখের জল সংযত করিয়া অশ্রু রুধ কণ্ঠে বলিলাম , " বাবা সবে মাত্র এসেছেন আপনার শরীর ভালো না , এ অবস্থায় কোথাও যা ওয়া ঠিক হবে না | ঠাকুর বলিলেন "যেমন ইচ্ছে |" আমি বললাম বাবা এখানে কিছুদিন বিশ্রাম করুন আপনি |"ঠাকুর পুনরায় বলিলেন ,যেমন ইচ্ছা |" আমি দুপুর বলা রাগ দুঃখে ওই অবস্থায় ওই স্থান ছাড়িয়া রওনা দিলাম , বেড়াবার পূর্ব ঠাকুর ৩, ৪ বার বলিলেন এই রোদ্রে আপনি কোথায় যান ? | আমি উত্তর না দিয়া কাঁদিতে কাঁদিতে প্রমথদাদা র বাসারদিকে রওনা হইলাম আর মনে ঠিক করিলাম শ্রীদেহের সঙ্গ r করিব না| প্রমথ দাদাকে সব খুলে বললাম | প্রমথদাদা কান্না থামালেন আমাকে শান্ত হতে বললেন | অন্নপ্রাশন শেষ করে ফুলগাজী ফিরলাম | একমাস হয়ে গেছে ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করিনা | বাড়িতে যে ই চিত্রপট আছে তাহাই প্রত্যহ পূজো করি | ক্রমে মনে যেন উত্তাল চাপা ব্যাথা অনুভব করতে লাগলাম | ঠাকুর কে দেখার ইচ্ছে মনের ভেতর কেমন যেন চঞ্চল করে উঠলো |
কিছুদিনের মধ্যে ফেনী হইতে চিঠি এলো ঠাকুর আমাকে দেখিবার জন্য উত্তাল হয়ে উঠছেন | ফেনী রওনা হইলাম | ঠাকুর-বাড়ীতে পৌছাবো মাত্র বাড়ীর সকলে ঠাকুর নিকটে নিয়া গিয়া দরজা বন্ধ করে দিলেন | প্রণাম করতে ঠাকুর জিগেস করলেন,'কেমন আছেন?" উত্তর করিলাম ,"ভালোই রেখেছেন বাবা |"
"ঠাকুর গম্ভীরস্বরে তিরস্কারের সঙ্গে বলিলেন "কত বড় হইছেন ! একটু তো সহ্য করতে পারলেনা, দেখেন
না নতুন ফাস পাইয়া যখন গাছগুলি লম্বা তাজা হইয়া ওঠে, ঝড়ের একটা দমকা হওয়াতে মাঝখানে ভাঙ্গে , সেখান থেকে আর ডাল পাল গজায় না |" আমি ঠাকুরের শ্রীচরণে লুটিয়ে পরে কাঁদিতে লাগিলাম, চোখের জলে আমার বুক ভাসিয়া গেল | দয়ানিধি ঠাকুর জয় গোবিন্দ বলে আমার মাথায় হাত বুলিয়া দিতেই আমার অন্তেরের গ্লানি দূর হইয়া গেল |
দয়ার ঠাকুর শ্রী রামচন্দ্র দেব
শ্রী তুলসী দাস গাঙ্গুলি
ধৈর্য ই একমাত্র ধর্ম ধৈর্য ই একমাত্র ধর্ম Reviewed by SRISRI RAMTHAKUR KOTHA O BANI YOUTUBE CHANNEL on 08:29 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.