..............

 শ্রী শ্রী ঠাকুরের কৈবল্যধাম অাশ্রম.

(শুভময় দত্ত িাবু মহাশয়ের ভাষ্য অনুযায়ী লেখা হইল।)
ঐদিন দ্বিপ্রহরে পূজা শেষ হইলে সেই কোঠায় শ্রী শ্রী ঠাকুরের চরনে অামরা পুষ্পাঞ্জলী দেওয়ার সময় কি যে বিমল অানন্দ অনুভব করিয়াছি। তাহা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। যখন পুষ্প ও বিল্ব পত্রাদি শ্রী চরনে অর্পণ করিতে করিতে শেষ হইয়া গেল, তখন শ্রী শ্রী ঠাকুর৷ নিজ হস্তে অর্পিত পুষ্পাদি তুলিয়া অামাদের কাহারও কাহারও হাতে অঞ্জলি প্রদানের জন্য দিয়াছিলেন। ঐ সময় তাঁহার চেহারায়ও অভূত পূর্ব্ব অাননন্দের স্ফুরণ হইয়াছিল। অামি সেই দিন কি তার পরদিন ঐ সময় এইরূপ কল্পানাতীত অানন্দ অনুভবের কারণ শ্রী শ্রী ঠাকুরকে জিজ্ঞসা করায়, ঠাকুর বলিয়া ছিলেন, "ঐ সময়ে শ্রীশ্রী গুরুদেব স্বয়ং উপস্থিত হইয়াছিলেন,, সেই জন্যই ঐরূপ অানন্দের স্ফুরণ হইতেছিল"। সেই দিন এবং সেই রাত্রে স্থানীয় জমিদার প্রানহরি দাস মহাশয় সদলবলে অাশ্রমে কীর্তণ করিয়া ছিলেন। সকলে প্রসাদ পাওয়ার পর অধিক রাত্রে শ্রীশ্রী ঠাকুর সামান্য কিছু গ্রহণ করিয়া তাঁহার জন্য অামরা যে বিছানার ব্যবস্থা করিয়াছিলাম তথায় শয়ন করিলেন। অামি ও অারো ২/১ জন ঐ কামরারই মেঝেতে ঘুমাইয়াছিলাম।পরদিন প্রাতে ঠাকুর অামাকে বলিলেন " এই কামরায় মোহন্ত থাকিবেন।" তখন অামি বলিলাম, "মোহন্ত মহারাজের থাকার ঘর পিছনে প্রস্তুত হইয়াছে,অাপনি এই কামরাতে থাকিবেন"। ঠাকুর তখন অত্যন্ত দয়ার্দভাবে অামাকে বলিলেন, " অামার তো কোন অাশ্রমেই থাকার গুরুর অাদেশ নাই। কিন্তু অামার সমস্ত শক্তিই এই অাশ্রমে থাকিবে সুতরাং অাপনাদের দুঃখিত হওয়ার কোন কারণ নাই"।
এই উত্তরে সাময়িক একটু হতভম্বের মত হইলেও ঠাকুরই কৃপা করিয়া ঐভাব স্থায়ী হইতে দিলেন না। ঐ কথার উপর অার কিছু বলা নেহাৎ -ই ধৃষ্টতা হইবে মনে করিয়া ঐ সমন্ধে অার কিছু বলা হইতে নিবৃত্ত হইলাম, যদিও অামাদের সকলেরই বিশ্বাস ছিল যে ঠাকুর অন্যান্য তখন হইতে অাশ্রমেই অনেক সময় থাকিবেনএবং অামাদের অনেক সময়েই শ্রী চরণ দর্শণের সৌভাগ্য হইবে।ঠাকুর অাশ্রমে থাকিবেন না, এই সংবাদ প্রচারিত হইলে, অাশ্রমে অাগত ভক্তগণ প্রথমে একটু বিস্মিত ও দুঃখিত হইলেও তাঁহারাও অল্প সময়ের মধ্যেই পুনঃ ঠাকুরের অাদেশ মান্য করাই মঙ্গল জনক হইবে বলিয়া মনে করিয়া শান্তি লাভ করিলেন। দোল পূর্ণিমার পূর্ব্বদিন, ঠাকুর বলিলেন,"অাপনারা বুড়ীর ঘর পোড়াইবেন না?" তখনি বুড়ীর ঘর প্রস্তুত করিয়া সন্ধ্যায় সকলে মিলিয়া পরমানন্দে বহ্ন্যুৎসব সম্পন্ন করা হইল।
ঐসময় অাশ্রমে একটি দোল প্রস্তুত করা হইয়াছিল ও তাহার উপরে চৌকিতে শ্রীশ্রী ঠাকুরকে বসান হইয়াছিলো। ঐদিন অথবা তৎপর দিন শ্রী শ্রী ঠাকুর অামাকে অাশ্রমের সংলগ্ন উপরের পাহাড়টি দেখাইয়া বলিলেন, " ঐ পাহাড়টির উপড় অাপনি বাড়ী করিয়া বাস করিলে, ছেলে পিলে সকলেরই স্বাস্থ্য ভালো থাকিবে।ঐ স্থানে বাড়ী করিবার চেষ্টা করিবেন "।

পাহাড়টি তৎকালে " কর্ণেল সাহেবের পাহাড়"বলিয়া খ্যাত ছিল। সে সময়ে তাহাতে একটি পুরাতন দালানের ভগ্নাবশেষ ছিল। দালানটির নানা স্থানে ও চর্তুদিকে বহু বিরাট গাছ থাকায় উহাতে বড় বড় সাপ ও বাঘ, শূকরাদি বন্যজন্তু থাকার অাশঙ্কায় কেহই ঐ পাহাড়ে যাইতো না। শ্রীশ্রী ঠাকুর ঐ স্থানে অামার বাড়ি করার অাদেশ দেওয়ায়, অামি উহা সরকার হইতে নেওয়ার চেষ্টায় ব্রতী হইলাম। অনুসন্ধান করিয়া জানিলাম, ঐ পাহাড় রেলওয়ে ল্যান্ড বলিয়া দুইবার সেটেল্ মেন্টে রেকর্ড হইয়াছে।


কিন্তু অামাদের বন্ধু রেল অফিসের কর্মচারীগণ অামাকে জানাইলেন যে, উহা প্রকৃতপক্ষে Railway relinquised land,অর্থাৎ যদিও রেলওয়ের জন্য প্রথমে ঐ জমি Acquire করা হইয়াছিল, পরে অনাবশ্যক বিধায় Railway কোম্পানী তাহা ছাড়িয়া দিয়াছে। তৎপর তৎকালীন settlement Officer নিকট তদ্বির করিয়া ঐ জমি Settlement Record -এ সরকারের জমি বলিয়া লিপি বদ্ধ করা হয়।ইহা সত্ত্বেও অামার তাহা পাইতে নানা প্রকারের যথেষ্ট বাধা উপস্থিত হইয়াছিল। কিন্তু শ্রীশ্রী ঠাকুরের অপার কৃপায় সমস্ত বাধা উত্তীর্ণ হইয়া হইয়াছইলাম।
Reviewed by SRISRI RAMTHAKUR KOTHA O BANI YOUTUBE CHANNEL on 12:39 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.