নোয়াখালীর সোমপাড়া গ্রামের অধিবাসী ছিলেন ডাঃ চিত্তরঞ্জন মজুমদার।
১৯৩৪ সাল।
সদ্য সমাপ্ত প্রবেশিকা পরীক্ষার পর হাতে অনন্ত অবসর। সেইজন্য তিনি তার জনৈক বন্ধুর বাড়ী গিয়েছিলেন কিছু বই সংগ্রহ করার জন্য।গল্পে-সল্পে অনেকক্ষণ কাটিয়ে ফিরছিলেন তিনি আপন গৃহে।
সদ্য সমাপ্ত প্রবেশিকা পরীক্ষার পর হাতে অনন্ত অবসর। সেইজন্য তিনি তার জনৈক বন্ধুর বাড়ী গিয়েছিলেন কিছু বই সংগ্রহ করার জন্য।গল্পে-সল্পে অনেকক্ষণ কাটিয়ে ফিরছিলেন তিনি আপন গৃহে।
পূর্ববঙ্গের পথঘাট অনেক স্থানেই তখন ঠিকমত ছিল না। অনেক সময় কোন গৃহস্থের বাড়ীর উপর দিয়েই বিনা বাধায় ও বিনা দ্বিধায় যাতায়াত করতে হ'ত।
চিত্ত বাবুও এক বাড়ীর উপর দিয়ে যাচ্ছিলেন। কয়েকজন গ্রাম-বৃদ্ধ গুড়ুক সহযোগে গল্প - গুজবে মত্ত।
চিত্ত বাবুও এক বাড়ীর উপর দিয়ে যাচ্ছিলেন। কয়েকজন গ্রাম-বৃদ্ধ গুড়ুক সহযোগে গল্প - গুজবে মত্ত।
এক বৃদ্ধের কণ্ঠস্বর হঠাৎ সব ছাপিয়ে কানে ভেসে এল। তিনি বলছিলেন--
"দীক্ষা কর্মটা জীবনের সমস্ত আয়োজন প্রয়োজন মিটিয়ে বৃদ্ধ অবস্থায় নেওয়া উচিত নয়। কারণ বার্ধক্যে নিজের অপটু দেহ নিয়েই অনেক সময় অস্থির থাকতে হয় -- আর সময়ও বেশী থাকে না।
সেজন্য অল্প বয়সেই গুরুকরণ করে নেওয়া ভাল।
তাতে সময়ও অনেক পাওয়া যায়। আর স্থির চিত্তে "নাম"ও করা চলে বেশী।"
"দীক্ষা কর্মটা জীবনের সমস্ত আয়োজন প্রয়োজন মিটিয়ে বৃদ্ধ অবস্থায় নেওয়া উচিত নয়। কারণ বার্ধক্যে নিজের অপটু দেহ নিয়েই অনেক সময় অস্থির থাকতে হয় -- আর সময়ও বেশী থাকে না।
সেজন্য অল্প বয়সেই গুরুকরণ করে নেওয়া ভাল।
তাতে সময়ও অনেক পাওয়া যায়। আর স্থির চিত্তে "নাম"ও করা চলে বেশী।"
কথাটা চিত্ত বাবুর কানে বেজে উঠলো। মনে হল এ যেন তাকেই উদ্দেশ্য করে বলা হল।
তাঁব জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রামঠাকুরের কাছে 'নাম' পেয়েছেন।চিত্তবাবু স্থির করলেন - রামঠাকুরের কাছ থেকেই তিনি 'নাম' নেবেন।
দাদা শহরে ওকালতি করেন। তিনি 'নাম' নেবার কথা দাদাকে জানালেন। দাদা ফেণীতে তার এক মক্কেলের কাছে একটি পত্র লিখে দিলেন আর সেইসময় ঠাকুর ফেণীতে যার বাড়ীতে সেই ঠিকানাও লিখে দিলেন।
আর বললেন সে যেন এখনই রওনা হয়ে ফেণীতে চলে যায়।
আর বললেন সে যেন এখনই রওনা হয়ে ফেণীতে চলে যায়।
চিত্তবাবু ফেণী এসে দাদার মক্কেলের কাছে জানতে পারলেন আজ সন্ধ্যাতে মক্কেল ভদ্রলোক ঠাকুর দর্শন করে ফিরেছেন।
ভোরের আলো তখনও ফুটে ওঠেনি।
স্নান সেরে তৈরী হয়ে নিলেন চিত্ত বাবু।
স্নান সেরে তৈরী হয়ে নিলেন চিত্ত বাবু।
শ্রীশ্রীঠাকুর তখন ফেণী কলেজের অধ্যাপক প্রমথনাথ চক্রবর্তী মহাশয়ের বাসগৃহে। সেদিকে রওনা দিলেন তিনি।
প্রমথবাবুর বাড়ী।
কোন লোকজন চোখে পড়ল না চিত্ত বাবুর। ঠাকুর এ বাড়ীতে আছেন কিনা তাও বোঝা যাচ্ছে না।
এদিক ওদিক খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ নজর পড়লএকটা ঘরের দরজায়।
কোন লোকজন চোখে পড়ল না চিত্ত বাবুর। ঠাকুর এ বাড়ীতে আছেন কিনা তাও বোঝা যাচ্ছে না।
এদিক ওদিক খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ নজর পড়লএকটা ঘরের দরজায়।
সাদা কাগজে লাল কালিতে লেখা দুটো লাইন--
"ঠাকুর মহাশয় অসুস্থ। বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষেধ।"
"ঠাকুর মহাশয় অসুস্থ। বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষেধ।"
চিত্ত বাবুর আনন্দ আর ধরে ন। তবে ত ঠাকুর মহাশয় এই ঘরেই আছেন।তিনি ঘরে ঢুকে পড়লেন।
একখানা তক্তপোষের ওপর বিছানায় শায়িত একজন।কিন্ত তাঁর আপাদমস্তক একখানা সাদা চাদরে আবৃত।
চরণের দিকের চাদরটি একটু সরিয়ে প্রণান করলেন তিনি।
ভুলে গেলেন যে শয়ান অবস্থায় কাউকে প্রণাম করা অনুচিত।
ভুলে গেলেন যে শয়ান অবস্থায় কাউকে প্রণাম করা অনুচিত।
হঠাৎই শ্রীশ্রীঠাকুর উঠে বসলেন বিছানায় সটান হয়ে। অসুস্থ ঠাকুরকে তোলায় ঠাকুরের কোপানলে পড়বেন এই ভয়ে চিত্ত বাবু কেঁদে ফেললেন।
অভয় দিয়ে ঠাকুর সস্নেহে বললেন--
"কান্দেন ক্যান? আপনি কি চান? "
"কান্দেন ক্যান? আপনি কি চান? "
চোখের জল মুছে চিত্ত বাবু হাঁটু গেড়ে বসে করজোড়ে নাম প্রার্থনা করলেন।
ঠাকুর বললেন-- "ওভাবে বসলে বেশী কষ্ট হবে। যেভাবে আপনি সবসময় বসেন সেভাবেই বসুন এবং নাম নিন।"
শ্রীশ্রীঠাকুর নাম বললেন। চিত্ত বাবু তাঁর সঙ্গে সঙ্গে অনেকবার তা উচ্চারণ করলেন।
এরপর ঠাকুর তাকে শোনালেন শ্রীনামের মাহাত্ম্য।
এরপর ঠাকুর তাকে শোনালেন শ্রীনামের মাহাত্ম্য।
চিত্ত বাবু জিজ্ঞেস করলেন কি নিয়মে কতবার তিনি দিনে রাতে ঐ নাম করবেন।
শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন--
"নিয়ম মানে শৃঙ্খলা। শৃঙ্খলা মানে হইল শৃঙ্খল ! শৃঙ্খল মানে বন্ধন। আপনে ক্যান বন্ধনের মধ্যে যাইবেন ?
যখন পারেন যতবার পারেন, নাম করবেন। এর কোন বিধি নিষেধ নাই। এই নাম করতে করতেই আপনে নিত্যধামে চইলা যাইবেন।"
যখন পারেন যতবার পারেন, নাম করবেন। এর কোন বিধি নিষেধ নাই। এই নাম করতে করতেই আপনে নিত্যধামে চইলা যাইবেন।"
সহসা প্রভাতবাবু সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। একটু বিরক্ত কন্ঠে বললেন, "তুমি কে হে ছোকরা? অসুস্থ ঠাকুরকে বিরক্ত করছ?"
চিত্ত বাবু অপরাধীর মত আনত শিরে নিরুত্তর...
ঠাকুর উত্তর দিলেন--
"ওনারে আমি আসতে বলছিলাম। সকাল থিকা ইনি কিছু খান নাই।মায়েরে গিয়া কন এনারে কিছু খাইতে দিতে।"
প্রভাতবাবুর সহধর্মিণী এসে খাবার ও এক গ্লাস জল এনে রাখলেন চিত্ত বাবুর সামনে।
তিনি খুবই লজ্জিত বোধ করছিলেন এই ভেবে- নাম নিলেন কিছু প্রণামী না দিয়েই। আবার এখানে বসেই সকালের জলখাবার।
তিনি খুবই লজ্জিত বোধ করছিলেন এই ভেবে- নাম নিলেন কিছু প্রণামী না দিয়েই। আবার এখানে বসেই সকালের জলখাবার।
ঠাকুর তাকে দু'তিন বার খেতে বললেন।এবার চিত্ত বাবু তা খেলেন।
বাড়ীর ভেতর থেকে ফিরে চিত্ত বাবু ফেরার অনুমতি চেয়ে প্রণাম করলেন।
শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন--
"আমি ত কারো কোন উপকারে লাগি না --আপনেরা সব কত কষ্ট কইরা আসেন। আর আপনাগো কষ্টই সার হয়।"
চিত্ত বাবু শুনছিলেন।
চিত্ত বাবু শুনছিলেন।
ঠাকুর আবার বললেন --" আপনে একটা কাজ করতে পারবেন?
দরজায় লেখা নিষেধ আজ্ঞাটি ছিঁড়ে নিয়ে দূরে ফেলে দেবেন।"
দরজায় লেখা নিষেধ আজ্ঞাটি ছিঁড়ে নিয়ে দূরে ফেলে দেবেন।"
ভীত হয়ে চিত্ত বাবু জিজ্ঞেস করলেন--
"যদি কেউ দেখে ফেলেন?"
"যদি কেউ দেখে ফেলেন?"
স্মিত হেসে ঠাকুর বললেন--
"না, কেউ দেখতে পারব না।"
"না, কেউ দেখতে পারব না।"
চিত্ত বাবু সেইমত কাজ সেরে ত মহাখুশী। তিনি তাকে শুধু নামই দিয়েছেন তা ত নয় তাঁর আদেশও তিনি পালন করতে পেরেছেন।
....................................................................................................................................
জয়রাম। জয় শ্রী রামঠাকুরের জয়। প্রণাম রইলো। ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত।
....................................................................................................................................
জয়রাম। জয় শ্রী রামঠাকুরের জয়। প্রণাম রইলো। ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত।
শ্রীশ্রীরামঠাকুরের লীলামৃত :---
Reviewed by SRISRI RAMTHAKUR KOTHA O BANI YOUTUBE CHANNEL
on
09:40
Rating:
No comments: