শ্রীশ্রীঠাকুরের সিদ্ধাশ্রম পরিব্রাজন (পর্ব-২)

🙏
🙏"ঠাকুরের নিরুদ্দেশ সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গে শ্রী ইন্দুভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একান্ত আলাপচারিতা"-
🙏ঠাকুর বলিলেন যে তাঁহারা সেখানে প্রায় ছয় মাস অবস্থান করিয়াছিলেন। আশ্রমটি অতি মনোরম, তুষার মরুর মধ্যে যেন একটি অতি ক্ষুদ্র মরূদ্যান।
🙏শ্রমে প্রবেশ করিয়াই তাঁহারা দেখিলেন যে সেখানে পাঁচটি আসন রহিয়াছে, দুইখানা খালি, আর তিনখানাতে তিনজন মহাপুরুষ অধিষ্ঠিত রহিয়াছেন।
🙏তাঁহাদের প্রত্যেকেরই শরীর অত্যন্ত শীর্ণ, মাংস একপ্রকার নাই বলিলেই চলে, চামড়া মুচড়াইয়া বুকের পাঁজরার মধ্যে প্রবিষ্ট হইয়া গিয়াছে। মাংস শুকাইয়া যাওয়ায় তাঁহাদের চক্ষুগুলি কোটর প্রবিষ্ট কিন্তু অত্যন্ত তীক্ষè এবং উজ্জ্বল। প্রথম সাধুটির সম্বন্ধে ঠাকুর বলিলেন যে তাঁহার অবয়ব এত দীর্ঘ ছিল যে ঠাকুর যখন তাঁহার সম্মুখে গিয়া দাঁড়াইলেন তখন দেখিলেন যে উপবিষ্ট অবস্থায়ই তাঁহার উচ্চতা দণ্ডয়মান ঠাকুরের প্রায় সমান।
🙏ঠাকুর হাত তুলিয়া তাঁহাকে অভিবাদন জানাইলেন, তিনি সেই ভাবেই প্রত্যভিবাদন করিলেন, কোন কথা বার্তাই হইল না। তাঁহারা তিনজনে এই তিনটি সাধুর সেবার ভার গ্রহণ করিলেন।
🙏তিনজনে মিলিয়া সারাদিন আশ্রমটি ঝাঁড়িয়া পুঁছিয়া রাখিতেন। আশ্রমের ধারেই পদ্মজাতীয় কয়েকটি ফুলের গাছ ছিল। প্রতিদিন প্রাতঃকালে প্রত্যেকে ঐ গাছগুলি হইতে একটি ফুল ও একটি পাতা সংগ্রহ করিয়া আনিতেন এবং সুদীর্ঘ বোঁটাটি ছিঁড়িয়া লইয়া ঐ পাতার উপরে সাধুদের সম্মুখে রাখিয়া একটু দূরে সরিয়া থাকিতেন।
🙏 ফিরিয়া আসিয়া দেখিতেন যে পাতাগুলি ঠিকই আছে কিন্তু বোঁটা কয়টি নাই, সহজেই বুঝিতেন যে সাধুরা এ বোঁটাগুলি গ্রহণ করিয়াছেন। এইভাবে ৫-৬ মাস কাটিয়া যাইবার পর হঠাৎ একদিন গুরু আসিয়া উপস্থিত হইলেন এবং তাঁহাদিগকে লইয়া ভিন্ন এক পথে যাত্রা শুরু করিলেন।
🙏আমি ঠাকুরকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম যে গুরু তাঁহাদের হঠাৎ সেই আশ্রমে রাখিয়া চলিয়া গিয়াছিলেন কেন?
🙏 ঠাকুর বলিয়াছিলেন যে, দীর্ঘকাল অনাহারে থাকায় ঐ সাধু তিনটির শরীর পতনের উপক্রম হইয়াছিল। আসন ছাড়িয়া উঠিবার নিয়ম না থাকায় তাঁহাদের পক্ষে আহার্য্য সংগ্রহ করাও সম্ভবপর ছিল না। তখনও তাঁহাদের দেহত্যাগের সময় হয় নাই, ঐ দেহের আরও কিছু কাজ অসমাপ্ত রহিয়াছে, সেই জন্যই গুরু এই ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। পাঁচটি আসনের মধ্যে দুইটি খালি ছিল কেন, এই প্রশ্নের উত্তরে ঠাকুর বলিয়াছিলেন যে ঐ দুইজন কোনও বিশেষ প্রয়োজনে সংসারে যাইয়া জন্মগ্রহণ করিয়াছেন, কার্য্য শেষ হইয়া গেলেই স্বস্থানে ফিরিয়া আসিবেন।
(ক্রমশ:)
সূত্র- রাম ঠাকুরের কথা। লেখক- শ্রী ইন্দুভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
জয় শ্রীশ্রী রাম ঠাকুর।
Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ(SriSriramthakur O gan Ganer vhovon Youtube channel) on 12:44 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.